বিদেশ ডেস্ক:
জাতিসংঘ মহাসচিব অ্যান্টোনিও গুতেরেস বলেছেন, আইসিসি (আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত) নিজেই মিয়ানমারের বিচারে সক্ষম। বৃহস্পতিবার নিউ ইয়র্কে জাতিসংঘ সদর দফতরে এক সাংবাদিকের প্রশ্নের উত্তরে তিনি এমন মন্তব্য করেন। ওই সাংবাদিকের প্রশ্ন ছিল, রাখাইনে রোহিঙ্গাদের ওপর সংঘটিত জাতিগত নিধনযজ্ঞ, গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ তদন্তে নিরাপত্তা পরিষদ আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত-আইসিসির কাছে সুপারিশ করবে কিনা? উত্তরে রোহিঙ্গা ইস্যুতে মিয়ানমারের বিচার করার পক্ষে দেওয়া আইসিসিরি মতামতের প্রসঙ্গ উল্লেখ করে গুতেরেস বলেন, এরইমধ্যে রোহিঙ্গা ইস্যুতে মিয়ানমারকে মোকাবিলার সামর্থ্য প্রমাণ করেছে আইসিসি।
মিয়ানমার আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের সনদে স্বাক্ষর করেনি। সে কারণে সরাসরি সে দেশে সংঘটিত অপরাধ বিচারের এখতিয়ার আইসিসির নেই। সনদে স্বাক্ষর না করা দেশকে আইসিসি তখনই বিচারের আওতায় নিতে পারে, যখন নিরাপত্তা পরিষদের পক্ষ থেকে এ ব্যাপারে সুপারিশ করা হয়। তবে মিয়ানমারের ক্ষেত্রে ব্যতিক্রমী সিদ্ধান্ত এসেছে আইসিসির পক্ষ থেকে।
আইসিসির প্রসিকিউটর ফাতো বেনসুদার করা এক আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে গত ৬ সেপ্টেম্বর নেদারল্যান্ডসের হেগে সংস্থাটির তিনজন বিচারক বিশিষ্ট প্রি-ট্রায়াল কোর্ট মিয়ানমারের বিচারের পক্ষে রায় দেন। রায়ে বলা হয়, মিয়ানমার এই আদালতের সদস্য না হলেও বাংলাদেশ এর অন্যতম সদস্য দেশ। তাই এ ঘটনার বিচার করার এখতিয়ার আদালতের রয়েছে। কারণ আন্তঃসীমান্ত অনুপ্রবেশের ধরনের জন্যই এই বিচার সম্ভব। এই সিদ্ধান্তের ধারাবাহিকতায় এরইমধ্যে অধিকতর তদন্ত শুরু করেছেন আইসিসির প্রসিকিউটররা।
বৃহস্পতিবার নিউ ইয়র্কে জাতিসংঘ সদর দফতরে এক সংবাদ সম্মেলনে এক সাংবাদিক জানতে চান, নিরাপত্তা পরিষদ রোহিঙ্গা ইস্যুটি আইসিসিতে পাঠাবে কি-না। এর জবাবে গুতেরেস ওই সাংবাদিকের উদ্দেশে বলেন, আইসিসি ইতোমধ্যেই বাংলাদেশকে সঙ্গে নিয়ে ওই বিচার প্রক্রিয়ায় যুক্ত হয়েছে। আপনি যে ব্যাপারে নিরাপত্তা পরিষদকে যুক্ত হতে বলছেন, এরইমধ্যে সেই বিষয়টির মীমাংসা হয়ে গেছে। গুতেরেস বলেন, ‘আমি যতটুকু বুঝতে পারছি, আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত (আইসিসি) এ বিষয়ে নিজেদের সক্ষমতার বিষয়টি প্রমাণ করতে সক্ষম হয়েছে। ইতোমধ্যেই তারা বিষয়টি (রোহিঙ্গা নিধনযজ্ঞ) খতিয়ে দেখতে তদন্ত শুরু করেছে।’
উল্লেখ্য, চলতি মাসেই আইসিসি মিয়ানমারের বিচারের পক্ষে রায় দেওয়ার পর আইনজীবী ফাতো বেনসুদা জানান, রোহিঙ্গাদের জোরপূর্বক বিতাড়িত করার সময় তাদের বিরুদ্ধে সংঘটিত অপরাধগুলো যুদ্ধাপরাধ নাকি মানবতাবিরোধী অপরাধ তা খতিয়ে দেখা শুরু হয়েছে।
আমরা সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।